ইখতিয়ার উদ্দীন আজাদ,নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের শ্যামবাটি বিদ্দিমাতা গ্রামে জন্ম। পিতার নাম কৃষ্ণ কর্মকার। মাতার নাম পাখি কর্মকার। দরিদ্র পিতার অসহায়েত্তের এক সময় মাতা অন্যের হাত ধরে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। বয়স বর্তমানে (২৭) রিনা কর্মকার অবস্থার বেগতিক দেখে স্বধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। তিনি জাহানারা-ওরফে রিনা আক্তার নাম ধারণ করেন। এ কারণেই সকলেই সহানুভুতির চোখে দেখতেন রিনাকে।
অবশেষে তিনি দিনাজপুর জেলার বিরামপুর উপজেলার মোল্লাপাড়া গ্রামের মুকুল হোসেনের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। মৃত তছির উদ্দীনের পুত্র মিজানুর রহমান মজনু+ ভাড়াটিয়া হিসাবে অবস্থান করতে থাকেন। এ ভাবেই প্রায় ৮ বছর যাবত তার স্বামীর সংসার হলে। স্থানীয়দের অভিযোগে জানাগেছে তার স্বামী নিয়মিত মদ্যপান করতেন ও মাদক ব্যবসার সাথে জড়িয়ে পড়ে। তারপর ও স্বামীর বিভিন্ন ধরণের অত্যাচার নির্যাতন সয়ে সংসার করে আসছিলেন এবং মাদক ব্যবসার বিরোধিরা করেও করছিলেন রিনা আক্তার।
কিন্তু গত ১৫ জানুয়ারি তাদের বাড়ি হতে থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ১৮৫ পিচ ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করেন। ওই সময় তার স্বামী মুকুল হোসেন (৩৭) টের পেয়ে বাড়ি হতে পালিয়ে গেলে থানা পুলিশ মুকুল হোসেনের নামে থানায় মাদক আইনে একটি মামলা হয়। এতে রিনা আক্তার হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে সরজমিনে এলাকায় গিয়ে জানাগেছে।
যার মামলা নং ১০ তারিখ ১৫/০১/২০১৬ইং। স্বামীর ওই কর্মকান্ডের কারণে রিনা তার স্বামীকে তালাক দেন। এর পর থেকে তার স্বামী মুকুল হোসেন ক্ষিপ্ত উঠেন তার স্ত্রীর ওপর। এর পর থেকে রিনা আক্তার ওই গোপিনগর মোড়ে ওই বাড়িতেই রিনা আক্তার ছোট একটি কাপড়ের দোকান করে কোন রকমভাবে সংসারের ব্যয় নির্বাহ করে আসছিলেন। গত ৩রা ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৭.৩০ মিনিটের দিকে অজানা ব্যক্তি তার দোকানে কাপড় ক্রয় করার জন্য আসেনর এবং তার দোকানে একটি চালের ব্যাগ রেখে ২টি কাপড় পছন্দ করেন।
তার নিকট খুরা টাকা নেই এবং তা ভাঙ্গানোর কথা বলে ওই ব্যাগটি রেখে টাকা খুচরা আনার কথা বলে অন্য কোনের দিকে যেয়ে আর ফিরে আসেনি তিনি। তার কিছুক্ষণ পড়েই থানা পুলিশ এসে ব্যাগটির মধ্যে অনুসন্ধান চালিয়ে ওই ব্যাগের মধ্যে থেকে ৪.৭ ইি একটি জাপানি পিস্তল, ৬ রাউন্ড গুলি ২টি ম্যাগাজিনসহ রিনা আক্তারকে গ্রেফতার করেন। অবৈধ অস্ত্র রাখার দায়ে একটি মামলা হয়। যার নং ৫ তারিখ ০৪/০২/২০১৬। পরদিন রিনাকে নওগাঁ জেল হজাতে প্রেরণ করেন পুলিশ।
ওই রিনার পিতা কৃষ্ণকর্মকার অভিযোগে জানায় ”আমি শুনেছি বাবু আমার মেয়েকে জামাই মুকুল হোসেন বিভিন্ন সময় নির্যাতন করতেন। আমার মেয়ে ভালো মানুষ বাবু ওই ঘটনার সাথে জড়িত নয়।” বলেই তার জরাজীর্ন বাড়ি হতে বেড়িয়ে সাংবাদিকদের নিকট হতে আস্তেই সরে পড়েন।
তার মা পাখিকর্মকার একই ধরণের অভিযোগ জামাইয়ের বিরুদ্ধে এনে বলেন ” আমার মেয়ের সাথে হাজতে দেখা করে শীতের কাপড়-চোপড় দিয়ে আইছি বাবু। যে ঘটাইছে ভগবারই তার বিচার করবেই বাবু। আমরা গরীব মানুষ খেটে খাই বলেতেই দু’চোখ বয়ে পানি ঝরতে লাগলো।
এ ব্যাপারে কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদ ও একই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ফয়জুল হক চৌধুরিসহ এলাকার সর্ব সাধারণ একই কথা বললেন রিনা আক্তার ষড়যন্ত্রের শিকার। এ ঘটানার মূল নায়ক তার ডিভোর্সকৃত স্বামীই হতে পারে! ইসলামি অনুভুতির কারণে সৎভাবে জীবন যাপন করে চলাই তিনি এ ঘটনার শিকার হয়েছে। আমরা তার নি:শর্ত মুক্তি কামনা করি। মামলা তদন্তকারী অফিসার এস,আই সমেজ আলী জানায় তার দোকান থেকে অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে বলেই তাকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। মামলাটি তদন্তধীন রয়েছে।
দি গ্লোবাল নিউজ ২৪ ডটকম/রিপন/ডেরি