ঝালকাঠি প্রতিনিধি : গৃহকর্মীকে ধর্ষণের মামলায় ঝালকাঠি জেলা বিএনপির জলবায়ু বিষয়ক সম্পাদক ও নলছিটি উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি কবির হোসেন জোমাদ্দারকে জেল হাজতে পাঠিয়েছেন আদালত।
গতকাল সোমবার দুপুরে ঝালকাঠির নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এ সেচ্ছায় আতœসমর্পণ করে জামিন চাইলে বিচারক জেলা ও দায়রা জজ রমনী রঞ্জন চাকমা তাকে জেল হাজাতে পাঠানো নির্দেশ দেন। রাস্ট্রপক্ষে আইনজীবী জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌসুলি আব্দুল মান্নান রসুল জানান, গত ৩০ অক্টোবর কবির হোসেন জোমাদ্দারের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল আদালত। এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নলছিটি থানার তৎকালীন পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কামরুজ্জামান ঘটনার সত্যতা পেয়ে গত ২২ জুলাই ঝালকাঠির নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ১ আদালতে কবির হোসেন জোমাদ্দারের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
গত ১৬ ফেব্রুয়ারি আদালতে এ মামলাটি দায়ের করেন নলছিটি উপজেলার সুবিদপুর গ্রামের নির্যাতিত ওই গৃহকর্মী। আদালতের তৎকালীন বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মো. শফিকুল করিম নলছিটি থানার ওসিকে অভিযোগটি এজাহারভুক্ত করার নির্দেশ দেন। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী নলছিটি থানায় মামলাটি লিপিবদ্ধ করা হয়। মামলার বিবরণে জানাযায়, শুকতাঁরা ব্রিকসের মালিক ঝালকাঠি জেলা বিএনপির জলবায়ু বিষয়ক সম্পাদক কবির হোসেন জোমাদ্দার নলছিটি উপজেলার তালতলা গ্রামের প্রতিবেশি এক কৃষকের মেয়েকে ৪ বছর পূর্বে পড়াশুনার সুযোগ করে দেওয়ার কথা বলে বাড়িতে নিয়ে যায়। ওই মেয়েকে সে তার বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ দেয়। গত বছরের (২০১৫) ২৭ জুলাই রাতে সে ওই বাড়িতে বসে লেখাপড়া করছিল।
এসময় কবির জমাদ্দার তাকে পিন্তলের ভয় দেখিয়ে নিজের কক্ষে নিয়ে গিয়ে তাকে ধর্ষণ করে। এর পর থেকে বিভিন্ন সময় তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন কবির জোমাদ্দার। এ ঘটনা তার পরিবারের অন্য কারো কাছে না বলার জন্য চাপ দেয় সে। এমনকি কাউকে জানালে তার বাবা মাকে হত্যা কারার হুমকি দেয় কবির জোমাদ্দার। এক পর্যায়ে সে অন্তসত্তা হলে কবির জোমাদ্দার জোর করে তাঁর গর্ভপাত ঘটায়। বিষয়টি জানাজানি হলে কবির জমাদ্দার তাকে রেজিষ্ট্রি ছাড়াই বিয়ে করার প্রস্তাব তার বাবা মাকে দেয়। কিন্তু তাকে বিয়ে না করেই ফের ধর্ষণ করে। ওই গৃহকর্মী তার মায়ের অসুক দেখতে বাড়ীতে আসে। সেখান থেকে আর কবির জোমাদ্দারের বাড়িতে ফিরে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সে। আসামী পক্ষে জামিন শুনানীতে অংশ নেন অ্যাডভোকেট ফয়সাল রহমান।
ঝালকাঠির আরো সংবাদঃ
হত্যা মামলার প্রধান আসামী শওকত সিকদারকে বরিশাল কারাগারে হস্তান্তর
ঝালকাঠি সদর উপজেলার বিনয়কাঠি ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম-আহবায়ক তৌহিদুল হত্যা মামলার প্রধান অসামী শওকত সিকদারকে বরিশাল কারাগাড়ে হস্তান্তর করা হয়েছে। বরিশালে একটি মামলা থাকায় ও চিকিৎসার জন্য গত ১৪ নভেম্বর তাকে বরিশাল কারাগাড়ে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে, ঝালকাঠির জেলার তারিকুল ইসলাম। জানাগেছে, ২০১২ সালে বরিশাল শহরের কাউনিয়া এলাকার এ্যাডভোকেট শহীদুল ইসলামের কাছ থেকে ঠিকাদারি কাজের জন্য একটি চেকে স্বাক্ষর রেখে ১০ লাখ টাকা ধার নেয় শওকত সিকদার। এরপরে দীর্ঘ দিন আইনজীবী শওকতের কাছে পাওনা টাকা চাইলে নানা রকমের টাল বাহানা শুরু করে। ব্যাংকে গিয়ে দেখে ওই হিসাব নম্বরে কোন টাকা নেই। পরে এ্যাডভোকেট শহীদুল ইসলাম বাদি হয়ে শওকত সিকদারের বিরুদ্ধে চেক জালিয়াতির অভিযোগে বরিশালের আদালতে মামলা করে। এই মামলায় ২০১৪ সালের ২১ মে বরিশাল যুগ্ম ও দায়েরা জজ ৪র্থ আদালতের বিচারক শওকত সিকদারকে সাড়ে আট মাসের সাজা প্রদান করে। দীর্ঘ দিন ধরে শওকত পলাতক ছিল। এর পরে তৌহিদুল হত্যা মামলার প্রধান অসামী করা হয় শওকত সিকদারকে। পরে এই মামলায় গত মাসে তাকে ঢাকা থেকে গ্রেফতার করে সিআইডি।